বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ও ডালবুগঞ্জ দুই ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত লক্ষীর হাট খালের উপর নির্মিত আয়রণ ব্রিজটি এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর দেড়যুগ আগে এ ব্রিজটি নির্মান করলেও সংস্কারের অভাবে দু’বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রিজটির উপর দিয়ে আটটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে।
ফলে চলাচল করতে গিয়ে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীসহ পথচারীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর ২০০১ সালে লক্ষীর হাট খালের উপর অর্ধেক সিসি ডালাই ও অর্ধেক লোহার এঙ্গেল দিয়ে ব্রিজটি নির্মান করে। ব্রিজটির উপর দিয়ে ডালবুগঞ্জও লতাচাপলী এবং ধুলাসার তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এছাড়াও কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজ, মিশ্রীপাড়া ফাতেমা হাই মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের ব্রীজ পার হয়ে স্কুল-কলেজে আসতে হয়। মেরামত না হওয়ায় বর্তমানে ব্রিজটি চরম বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে ব্রিজটির আর সিসি পিলার ভেঙ্গে যাওয়ায় ও লোহার এঙ্গেল মরিচা ধরে ভেঙ্গে যাওয়ায় স্থানীয়রা এ ব্রিজটি সচল রাখতে কাঠ দিয়ে মেরামত করে চলাচল করছে, তাও রোদ বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এই লক্কর-ঝক্কর ব্রিজের উপর দিয়ে পথচারীরা চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পরেন। সবচেয়ে বেশী দুর্ঘটনার শিকার হয় স্কুল-কলেজ ছাত্র-ছাত্রীরা। ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। মিশ্রীপাড়া ফাতেমা হাই মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭ম শ্রেনি ছাত্র মো.জোবায়ের কবির হামিম জানান , লক্ষীর হাট খালের উপর ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয় যেতে হয়। ব্রিজ যখন পারাপার হয়েই তখন মনে পরে যেনো ব্রিজ থেকে পরে যায়। তার পর ও পড়াশুনার জন্য ব্রিজ পার হয়ে বিদ্যালয় যেতে হয়। বরকুতিয়া গ্রামের ব্যবসায়ীক রুমান মৃধা জানান, নির্মানের পর থেকে এ ব্রিজটির আজ পর্যন্ত কোন মেরামত করা হয়নি। লোকজনের চলাচলে দূর্ভোগ দেখে কাঠের তক্তা দিয়ে স্থানীয়রা মেরামত করেছে। তা আবার রাতের আঁধারে কাঠের তক্তা চোরে নিয়ে গেছে।
মিশ্রীপাড়া ফাতেমা হাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা জানান, স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর ২০০১ সালে লক্ষীর হাট খালের উপর ব্রিজ নির্মানের পর থেকে কোনো সংস্কার না করায় ব্রিজটি মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে। আর আমার বিদ্যালয় ছেলে মেয়েরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজ পার হয়। সরকার আট গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ও ছেলে মেয়েদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত সেখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মান করা উচিত।
লতাচাপলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, ব্রিজটি দিয়ে চলাচল অনুপযোগি ঘোষণা করা হয়েছে তার পরেও লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলছে। লতাচাপলী ইউনিয়নে এরকম আরও ব্রিজ রয়েছে যা দ্রুত নির্মাণ করা দরকার অন্যথায় যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে, তবে সংস্কারের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ চলছে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকৌশলী আঃ মান্নান বলেন, বিষয়টি জেনেছি এবং কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply